দুঃসংবাদের বাহক হতে ভালো লাগে না।
মাত্র গতরাতে তারাপদ রায়ের একটি কবিতা পড়ছিলাম দেশ-এর ২ অগাস্ট, ২০০৭ সংখ্যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খবর এলো, কবি আর নেই, চলে গেছেন।
শক্তি-সুনীলদের সমসাময়িক তারাপদ রায় কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন শুরু থেকে। এমনই সেই সম্পৃক্তি যে একমাত্র পুত্রের নামও রেখেছেন কৃত্তিবাস।
তাঁর জন্মস্থান ও আদি নিবাস ছিলো টাঙ্গাইলে। দেশভাগের পর কলকাতা। কিন্তু তাঁর গদ্যে-পদ্যে সর্বত্র টাঙ্গাইল ছিলো আজীবন। এমনকি, সর্বশেষ কবিতা যেটি পড়ছিলাম গতরাতে সেখানেও নাম উল্লেখ না থাকলেও টাঙ্গাইলের কথাই লিখেছেন বলে অনুমান করা যায়।
কবিতাটি এখানে তুলে দিই।
পুরনো শহরতলিতে
তারাপদ রায়
আবার ফিরে এলাম,
আর একটু খোঁজ নিয়ে এলেই ভাল হত।
বাড়ির সামনের দিকে
একটা কয়লার দোকান ছিল
কাঠ, কয়লা, কেরোসিন - খুচরো কেনা বেচা,
কেউ চিনতে পারল না
দু'জন রাস্তার লোক বলল,
'এদিকে কোনো কয়লার দোকান নেই
গলির এপারে রাধানাথ দত্তের গ্যাসের দোকান
সেখানে খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।
'মনে আছে কয়লার দোকানের পিছনে ছিল বড় উঠোন,
কয়েকটা আম কাঁঠাল গাছ, ভাঙা বারান্দা, ঘর দোর।
এখন তো কিছুই নেই,
শুধু একটা নেমপ্লেট, 'নাগরিক'।
চারতলা বাড়ি, ষোলটা ফ্ল্যাট,
এরই মধ্যে কোনওটায় আমি ফিরে এসেছি।
কিন্তু কয়তলায়, কাদের ফ্ল্যাট?
স্বর্গীয় রূপকবাবুর পদবিটা যেন কী ছিল,
তাঁদের নতুন বাসাবাড়িতে এখন কে থাকে -
কোনও খোঁজখবর রাখি না,
শুধু মনে আছে তাঁর ভাইঝি টুলটুলি।
না। সেই বাড়িটা জগৎসংসারে আর নেই,
টুলটুলিকে কেউ চেনে না।
পুরনো শহরতলির নতুন পাড়ায় বোকার মতো ঘুরি।
----------------------
২০০৭-০৮-২৫
----------------------
Saturday, October 20, 2007
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment