১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খবরের কাগজে ও পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধে তিরিশ লক্ষ মানুষের নিহত হওয়ার ও দুই লক্ষ নারীর সম্ভ্রমহানির কথা লেখালেখি হয়েছিলো। পাকিস্তানীরা তা পছন্দ করেনি। কারণ, তার আগে দুই দশকের বেশি সময় এই বিষয়টি ততো জোরেশোরে বলা হয়নি। হলেও কারা এসবের হোতা ছিলো তা ঢেকেঢুকে রাখা হয়েছিলো।
পাকিস্তান সরকার ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে ডেকে জানায়, এইসব প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। কারণ তাদের মতে এই তথ্যগুলি ঐতিহাসিকভাবে অসত্য এবং সংখ্যাগুলি অনেক বাড়িয়ে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের হাই কমিশনার কিউ এ এম এ রহিম খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, সঠিক সংখ্যাটা তাহলে আপনারাই বলে দিন।
পাকিস্তানীদের তখন মাথায় হাত। বলে কী লোকটা? পাকিস্তান এইসব অপরাধের কোনোটাই কখনো স্বীকার করেনি। এখন যদি তারা বলে তারা দু'জন নিরস্ত্রমানুষকেও খুন করেছিলো, তাহলেও দোষ স্বীকার করা হয়। তা তো তারা করতে পারে না।
রহিম সাহেব আরো জানিয়েছিলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্যে ত্যাগ স্বীকার করেছিলো যে মানুষগুলি তাদের সম্মান জানালে যদি পাকিস্তানের মন খারাপ লাগে, যদি দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়, বাংলাদেশের তাতে কিছু করার নেই।
এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দফতর ঢাকায় পাকিস্তানী হাই কমিশনের মিসেস রিফাত ইকবালকে ডেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, পাকিস্তান যদি একাত্তরের অপরাধের জন্যে ক্ষমা চায়, আমরা ক্ষমা করে দিতে পারি। তাদের অপরাধগুলি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু স্বাধীনতার জন্যে যে মানুষেরা প্রাণ দিয়েছেন, সম্মান হারিয়েছেন যেসব নারী তাদের আমরা ভুলে যাই কী করে?
Tuesday, October 23, 2007
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment