ভোরের আজানে সুন্দর সুর করে বলা হয়, ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম।
আমি এই তত্ত্বকথাকে একটু ঘুরিয়ে নিয়ে না লেখার কতো যে অজুহাত বানাই! সারাদিনের মেহনত (আচ্ছা মিন্তি শব্দটা কী মেহনতী-র সংক্ষিপ্তরূপ?) শেষ করে, বাবাগিরিসহ সংসারকর্মের দায় সম্পন্ন করে লিখতে বসার বাসনা থাকে।
লিখি বা লিখবো এরকম একটা ভাবভঙ্গি করে নিজের জন্যে আলাদা একটা ঘর দখলে রেখেছি। কমপিউটারে বসে প্রথম যে কাজটি করি, আপনার অনুমান নির্ভুল, ইমেল চেক করা। মেল থাকলো তো তা পড়ো এবং উত্তর লেখো। না থাকলে পুরনোগুলো কি একটু দেখার ইচ্ছে হতে পারে না? নিশ্চয়ই পারে। খুবই দরকারি কাজ।
তারপরে একটু দেশের খবর জানতে হয়। বিদেশে বাস করি মানেই তো দেশের খবরের জন্যে বুক উথাল-পাথাল। যদিও জানি বছরে একদিনের খবরের কাগজ পড়লে বাকি ৩৬৪ দিন আর না পড়লেও চলে। একটু এদিক-ওদিক, এই তো। ইন্টারনেট এখন বাংলা কাগজ আমার ঘরে এনে ফেলেছে। একটা-দুটো করে ছয়-সাতটা কাগজ দেখা হলো। তারপরও খুঁতখুঁত, আচ্ছা আজ তো ওই কাগজটা দেখলাম না। তা থাক, দুয়েকটা সাপ্তাহিকও তো দেখতে হয়।
খবরের কাগজ পড়তে পড়তে আমি কিন্তু দেশের কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছি। দেশ বলতে আসলে দেশের মানুষ। পরিবারের লোকজন আছে, বন্ধুবান্ধব আছে - সবার খবর জানার জন্যে বুকের মধ্যে আইঢাই। তাহলে ফোন করা যাক।
ঢাকায় তখন সকাল। বন্ধুদের কেউ কেউ তখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। সকালবেলার বেলার পাখি হয়ে সবার আগে কুসুমবাগে উঠবো আমি ডাকি ভাব নিয়ে তাদের ঘুম থেকে তুলে তাদের গতরাত্রির জাগরণের গল্প শুনি। আচ্ছা রাখি, তুই ঘুমা বলে আরেকজেনর নাম্বার তুলে নিই।
এই করে করে রাত অনেক হলো ভেবে ঘুমাতে যাওয়ার কথা ভাবি। একটু অপরাধী লাগে তখন। আচ্ছা, আমার না ওই লেখাটা আজ শেষ করার কথা ছিলো। ২০-৩০ মিনিট, তারপরে ভাবি, আজ থাক। কাল ঠিক এটা শেষ করবো। আজ শেষ করতেই হবে কে বললো? না করলে কী হয়? একটু বিশ্রামও তো দরকার। সকালে আবার উঠতে হবে, এখন ঘুমাতে যাই।
এরপরও বলবেন আমি লিখি না? বলার সাহস হবে আপনার?
-------------------
২০০৭-০৬-১৪
Thursday, October 18, 2007
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment