আশির দশকের মাঝামাঝি একটি গান শুনেছিলাম, সম্ভবত তপন চৌধুরীর গাওয়া। হুবহু মনে নেই, তবে গানে উদ্দিষ্ট প্রেমিকাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তোমার মনের ওই মিনিবাসটিতে আমার একটুখানি জায়গা হবে কি?
কবিতায়-গানে অনেককিছু অনায়াসে জায়েজ হয়, সুতরাং কিছু কষ্ট হলেও মেনে নিয়েছিলাম যে কারো মনের ভেতরে যাত্রীবাহী মিনিবাস থাকা সম্ভব। আমাদের সনাতন রুচি বা চিন্তায় একটু ধাক্কা তো লাগেই। তাতে কিছু এসে যায় না, পুরনো ধ্যান-ধারণা প্রবল অনিচ্ছা নিয়েও সবসময়ই পরিবর্তনের অপেক্ষায় থাকে। সাহিত্যে ইদানিং উত্তরাধুনিকতার দোহাই পেড়ে অনেক অচল সিকিও পার পেয়ে যাচ্ছে। সেই যুক্তিতে হয়তো এই গানটিকেও মেনে নেওয়া যায়। অথবা ভাবা যেতে পারে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ব্যবহার্য, তা যতো অকাব্যিক হোক, গানে-কবিতায় প্রতিফলিত হবেই। তাই তো হওয়া উচিত।
কবি ও গান রচয়িতাদের (তাঁরা যে কেন কবি হিসেবে চিহ্নিত হন না, কে জানে!) চোখে পড়েছে কি না জানি না, তবে কমপিউটার এখন আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ হয়ে যাওয়াতে শব্দ ব্যবহারে ও ভাবনায় একটি নতুন এলাকা উন্মোচিত হয়ে পড়েছে। কোনো ব্যর্থ প্রেমিক হয়তো বিগত প্রেমিকাকে উদ্দেশ করে বলছে, তোমার মেমোরি থেকে আমাকে তুমি ডিলিট করে দিও।
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জীবিত থাকলে বিখ্যাত ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ না বলে হয়তো ইমেল করতে বলতে পারতেন। এককালের জনপ্রিয় ‘নাই টেলিফোন নাই রে পিয়ন নাই রে টেলিগ্রাম / বন্ধুর কাছে মনের কথা ক্যামনে পৌঁছাইতাম’ গানটি আজকের দিনে কী অচল! ক্যামনে পৌঁছাইতাম-এর সহজ উত্তর হলো ইমেল, ইনস্ট্যান্ট মেসেজ অথবা সেলফোনে এসএমএস। আর টেলিগ্রাম জিনিসটি তো আমাদের চোখের সামনে বিলুপ্ত হয়ে গেলো এই সেদিন।
Saturday, October 20, 2007
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment